নিজস্ব প্রতিনিধি, হুগলী - দুর্গাপুজো মানেই উৎসব, আনন্দ আর চিরন্তন রীতি। কিন্তু হুগলীর বৈঁচিগ্রামে এই পুজোর রূপটা একেবারেই আলাদা। কারণ, একই গ্রামে যুগ যুগ ধরে দুই রূপে পূজিত হন দেবী দুর্গা।একদিকে সর্বানী, অন্যদিকে সার্বণরূপে। দুই প্রতিমা, দুই পরিবার, কিন্তু বিসর্জন হয় একই ঘাটে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে ,সার্বণ পুজোর ইতিহাস জুড়ে রয়েছে নানান বৈচিত্র।পরিবারের সদস্য সমীর চক্রবর্তী জানিয়েছেন, এই পুজো শুরু করেছিলেন ঈশ্বর দিগম্বর চক্রবর্তী। লোকমুখে শোনা যায়, আকবরের আমলে স্বপ্নাদেশ পেয়ে তিনি পুজো শুরু করেছিলেন। দেবী নিজেই তাঁকে বলেছিলেন, “আমি মা সর্বানী।” সেই থেকে দেবীর নামকরণ হয় সর্বানী।
প্রথমে দেবীর পুজো হয় পঞ্চমুণ্ডির আসনে, পরে কাঠামোয় প্রতিমা প্রতিষ্ঠিত হয়। বিশেষত্ব হলো, এখানে দেবীর সিংহ নয়, থাকে নরসিংহ। দেবীর সঙ্গে লক্ষ্মী, গণেশ, কার্তিক বা সরস্বতী কেউই থাকেন না। ষষ্ঠীর দিন থেকে পুজো শুরু হয়, নবমীতে ১৬ প্রকার নৈবেদ্য আর দশমীতে বিশেষ ভোগ হিসেবে ল্যাঠা মাছ পোড়া নিবেদন করা হয়।

আগে এখানে ছাগল বলি দেওয়া হতো। কিন্তু কথিত আছে, দেবী নিজে মুখ ফিরিয়ে নেন এবং স্বপ্নাদেশ দেন বলি বন্ধ করার। তারপর থেকেই এখানে ছাগলের বদলে কলা, শশা, কুমড়ো, আঁখ ও ছাঁচির প্রতীকী বলি হয়। বিশেষ ব্যাপার হলো, বলি কোনো পুরোহিত দেন না, পরিবারের সদস্যই এই দায়িত্ব নেন।
অন্যদিকে, একই গ্রামের ভট্টাচার্য পরিবারের দুর্গাপুজো পরিচিত “সার্বণ” নামে। এই পুজো কত পুরনো, তার সঠিক হিসাব জানা নেই। পরিবারের সদস্য কুমকুম ভট্টাচার্য জানান, মহাপ্রভু চৈতন্যদেবের জন্মেরও আগে এই পুজো শুরু হয়েছিল। ইতিহাস বলে , বর্ধমানের রাজা সভাপণ্ডিতকে তর্কে হারিয়ে “সার্বভৌম” উপাধি পেয়েছিলেন ভট্টাচার্য পরিবারের পূর্বপুরুষরা। তখনই এই পরিবারের কাছে কিছু নিষ্কর সম্পত্তি আসে। সেই থেকে আজও চলে আসছে পুজো। হাতে লেখা পুথির নিয়মাবলী মেনে পুজো হয় এই বাড়িতে। পুজোয় ৩ দিন হয় ছাগ বলি।

এখানেও একচালার দুর্গা প্রতিমা, তবে মায়ের সঙ্গে অন্য কোনো দেবদেবী থাকেন না। পুরোনো হাতে লেখা পুঁথি মেনে আজও হয় মায়ের পূজা। এখানে এখনো বলির প্রথা চালু আছে। অষ্টমীতে ডাকিনী-যোগিনীর পূজা হয়, আর নবমীতে ১০৮ সূরাসূর অস্ত্রশস্ত্রের পূজা। বলির আগে বিশেষ নিয়ম মেনে “মাষ ভক্ত বলি” দেওয়া হয় সিদ্ধ চাল, মাসকলাই, সরষের তেল, হলুদ মিশিয়ে কলাপাতায় নিবেদন।
তবে দুই বাড়ির পুজো আলাদা হলেও সম্পর্ক গভীর। সর্বানী সন্ধিপুজোর সময় ভট্টাচার্য পরিবারের সদস্যরা বাজনা বাজিয়ে হাজির হন চক্রবর্তী বাড়িতে। সেখানেই একসঙ্গে পূজো অঞ্জলি দিয়ে উপবাস ভঙ্গ করেন দুই পরিবারের সদস্যরা।দশমীর দিনও থাকে মিলনের ছবি। সন্ধ্যায় সর্বানী মাকে চারপাড়া ঘুরিয়ে আনা হয়, সার্বণ মাকেও বেদি থেকে নামিয়ে বরণ করা হয়। তারপর শুরু হয় সিঁদুর খেলা। শেষে স্থানীয় লক্ষ্মীপুর ঘাটে একসঙ্গে বিসর্জন দেওয়া হয় দুই বোন সর্বানী ও সার্বণকে।

ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতা অনুযায়ী আজও এই দুই পুজো ঘিরে ভিড় হয় চারপাশের গ্রাম থেকে। সর্বানী বাড়িতে হয় কালীপুজো, আর ভট্টাচার্য বাড়িতে পালিত হয় শিবদুর্গার পূজা। শতাব্দী প্রাচীন এই রীতি আজও সমানভাবে টিকে আছে। গ্রামবাসীর বিশ্বাস, দুই দেবী বোন একসঙ্গে থাকায় গ্রামে সুখ শান্তি ও সমৃদ্ধি বজায় আছে।
মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে
মুখ্যমন্ত্রীকে সরাসরি আক্রমণ অর্জুন সিংয়ের
আরও বড় আন্দোলনের হুমকি বিরোধীদের
বৈধ নাগরিক হয়েও ডিটেনশন ক্যাম্পে বীরভূমের ৫ যুবক
স্থানীয়দের আশ্বাস উত্তর মালদহের বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মুর
তদন্তে নেমেছে অশোকনগর থানার পুলিশ
সীমান্ত অনুপ্রবেশে বাড়ছে উদ্বেগ
অতিরিক্ত কাজের চাপে অসুস্থ দাবি পরিবারের
বিশালাকার মিছিল নিয়ে ডেপুটেশন কর্মসূচি পালন
৯ ডিসেম্বর কোচবিহারে মুখ্যমন্ত্রীর সভা
আহত হাতিটিকে হাসপাতালে ভর্তি করেছে বন দফতরের কর্মীরা
সরকারকে ইমেল করা হলেও জবাব পায়নি বলে দাবি পরীক্ষার্থীর
ঘটনার তদন্ত শুরু পুলিশের
শাসক দলের কৰ্মসূচিতে যোগদান না করায় মারধরের অভিযোগ
বিশেষ চেকিংয়ের পরেই কেন্দ্রে প্রবেশাধিকার পেয়েছেন পরীক্ষার্থীরা
হামলার কথা স্বীকার ইজরায়েলের
সতর্কতামূলক পদক্ষেপ এয়ারবাসের
সোশ্যাল মিডিয়ায় মুহূর্তের মধ্যে ভাইরাল ভিডিও
বিবৃতি জারি ট্রাম্প প্রশাসনের
আপাত বন্ধ স্কুল-অফিস