নিজস্ব প্রতিনিধি , কলকাতা - পশ্চিমবঙ্গের পশ্চিম প্রান্তে অবস্থিত ঝাড়গ্রাম আজ এক অনন্য ভ্রমণ গন্তব্য। প্রকৃতির নৈঃশব্দ্য, শাল-মহুয়ার বন, পাহাড়ি হাওয়া আর ইতিহাসের ছোঁয়া—সব মিলিয়ে এটি যেন শহুরে ক্লান্তি থেকে মুক্তির এক আদর্শ আশ্রয়। যারা কলকাতার ব্যস্ত জীবন থেকে একটু দূরে, শান্ত অথচ প্রাণবন্ত এক জায়গায় যেতে চান, তাদের জন্য ঝাড়গ্রাম একেবারে উপযুক্ত।
ঝাড়গ্রামের ইতিহাস ১৬শ শতকের মানভূম রাজ্যের সঙ্গে যুক্ত। রাজা সার্দুল সিং দেও এখানে ঝাড়গ্রাম রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন। ব্রিটিশ আমলে রাজপরিবার প্রশাসনিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেন। রাজবাড়ি, পুরনো মন্দির, স্কুল—সবই সেই ঐতিহ্যের সাক্ষ্য বহন করে। স্বাধীনতার পর রাজপ্রাসাদের ঐতিহ্য সংরক্ষণের কাজ এখন সরকারের হাতে, যা পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত।
কলকাতা থেকে ঝাড়গ্রামের দূরত্ব প্রায় ১৭০ কিলোমিটার। সেখানে পৌঁছনোর সবচেয়ে সহজ উপায় ট্রেন বা গাড়ি। ট্রেনে, হাওড়া থেকে রূপসী বাংলা এক্সপ্রেস, গীতাঞ্জলি এক্সপ্রেস, ইস্পাত এক্সপ্রেসসহ বহু ট্রেন ঝাড়গ্রামে যায়। সময় লাগে প্রায় ৩.৫ থেকে ৪ ঘণ্টা। ঝাড়গ্রাম স্টেশন থেকে শহরের মূল কেন্দ্র বা হোটেল এলাকায় অটো ও টোটো সহজেই পাওয়া যায়। গাড়িতে, এনএইচ-৬ ধরে গাড়িতে যেতে পারেন। পথটি অত্যন্ত সুন্দর—দুই পাশে শাল, পলাশ আর লাল মাটির গ্রাম। নিজের গাড়ি না থাকলে প্রাইভেট ক্যাব ভাড়া নিলেও একদিনের মধ্যে আসা-যাওয়া সম্ভব।
ঝাড়গ্রামে থাকার ব্যবস্থা খুবই ভালো। রাজকীয় ঐতিহ্যে ভরপুর ঝাড়গ্রাম রাজবাড়ি ট্যুরিস্ট লজ এখন জনপ্রিয় পর্যটন আবাসন। রাজবংশের পুরনো প্রাসাদটি আজ আধুনিক হেরিটেজ রিসোর্টে রূপান্তরিত হয়েছে। এছাড়া বনলতা রিসোর্ট , গোপীবল্লভ ভিলা , ঝাড়গ্রাম প্যালেস রিসোর্ট ও সরকারি ওয়েস্ট বেঙ্গল ট্যুরিজম লজ আছে। ভাড়া সাধারণত ১২০০ থেকে ৩০০০ টাকার মধ্যে, নির্ভর করে কক্ষের ধরন ও মৌসুমের ওপর।
ঝাড়গ্রামে ঘোরার মতো স্থান প্রচুর। ঝাড়গ্রাম রাজবাড়ি:রাজপরিবারের বাসভবন, যা ব্রিটিশ স্থাপত্যে নির্মিত। এর রাজকীয় পরিবেশ পর্যটকদের আকর্ষণের মূল কেন্দ্র।
চিল্কিগড় রাজবাড়ি ও কানকদুর্গা মন্দির: ঘন অরণ্যের মাঝে অবস্থিত এই প্রাচীন মন্দির দুর্গাপূজার সময় আলাদা মাত্রা পায়। ঝাড়গ্রাম ডিয়ার পার্ক ও মিনি জু: পরিবার নিয়ে ঘোরার জন্য দারুণ জায়গা। এখানে হরিণ, ময়ূর, খরগোশ ও নানা প্রজাতির পাখি দেখা যায়। বেলপাহাড়ি, কেনজরাবুরু ও ঝিলিমিলি: শালবন ঘেরা পাহাড়ি অঞ্চল, প্রকৃতিপ্রেমীদের জন্য আদর্শ। গুলিঙ্গা ঝরনা ও ঘাটশিলা জলপ্রপাত, ঝিরিঝিরি বাতাস আর জঙ্গলের নিস্তব্ধতা একসঙ্গে উপভোগ করা যায়।
ঝাড়গ্রাম ভ্রমণ খুব বেশি খরচসাপেক্ষ নয়। যাতায়াত:ট্রেনে আসা-যাওয়া মিলিয়ে প্রায় ৫০০–৮০০ টাকা । গাড়িতে গেলে প্রায় ২৫০০–৩০০০ টাকা (রাউন্ড ট্রিপ)। থাকা: ১২০০–৩০০০ টাকা প্রতি রাত। খাওয়া: প্রতিদিন প্রায় ৩০০–৫০০ টাকায় ভালো খাওয়া যায়। স্থানীয় দর্শন:অটো বা গাড়ি ভাড়া দিনে ৮০০–১৫০০ টাকা। সব মিলিয়ে ২ দিন ১ রাতের ঝাড়গ্রাম ট্রিপের মোট খরচ মাথাপিছু আনুমানিক ৩৫০০ থেকে ৫০০০ টাকার মধ্যে।
অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত সময় ঝাড়গ্রাম ভ্রমণের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত। শীতে আবহাওয়া মনোরম থাকে, আর শালবন ঘেরা প্রান্তরে পাখির ডাক আপনার ভ্রমণকে আরও রোমাঞ্চকর করে তোলে। ঝাড়গ্রাম শুধুই একটা ভ্রমণস্থল নয়, এটি প্রকৃতি আর ইতিহাসের এক মেলবন্ধন। লাল মাটির পথ, রাজবাড়ির ঐতিহ্য, অরণ্যের নীরবতা আর পাহাড়ের ছোঁয়া—সব মিলিয়ে ঝাড়গ্রাম একবার গেলে মন থেকে মুছে যায় না। সপ্তাহান্তে কলকাতা থেকে ঝটিকা সফরে ঝাড়গ্রাম আপনার পরের গন্তব্য হতে পারে নিঃসন্দেহে।
এর ইতিহাস যেমন রোমাঞ্চকর, তেমনি করুণ পরিণতিও কম নয়
অসংখ্য ভক্ত প্রতিদিন এখানে আসেন মা তারার দর্শনের জন্য
প্রথমবারের মতো আইসল্যান্ডে মশার সন্ধান মিলেছে
কিভাবে ঠিক হয়, আর কেনই বা প্রয়োজন হয় নাম দেওয়ার
ডোকরা শিল্প শুধু ভারতের ঐতিহ্যের প্রতীকই নয় বরং বিশ্ববাজারেও ভারতীয় হস্তশিল্পের এক বিশেষ পরিচয় বহন করে
জেনে নিন জগদ্ধাত্রী পুজোর অতীত ও বর্তমান
আগামী বছরের অক্টোবর থেকে ওয়েলসের উত্তরাঞ্চলে অবস্থিত আরএএফ ভ্যালি ঘাঁটিতে এই প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরু হবে
আজ এই আলোকসজ্জা শুধু জগদ্ধাত্রী পুজোতেই সীমাবদ্ধ নয়
ঝলমলে বাজির পেছনে রয়েছে হাজার বছরের এক চমকপ্রদ ইতিহাস
বাংলাদেশের মানবাধিকার সংগঠনের প্রকাশিত তথ্যে রীতিমতো শোরগোল পড়ে গিয়েছে
মাদক পাচারকারীদের জব্দ করতে মরিয়া চেষ্টা ট্রাম্প প্রশাসনের
রুশ উপকূলে পরমাণু অস্ত্রবহনে সক্ষম ডুবোজাহাজ মোতায়েন আমেরিকার
পাইলটকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে
দক্ষিণ কোরিয়া থেকে ফের ভারত-পাক সংঘর্ষ থামানোর কৃতিত্ব নিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট