নিজস্ব প্রতিনিধ , কলকাতা - কলকাতার দক্ষিণাংশে অবস্থিত কালীঘাট কেবল এক ধর্মস্থল নয়, এটি বাংলার আধ্যাত্মিক ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের এক উজ্জ্বল প্রতীক। শাস্ত্রমতে কালীঘাট হিন্দু ধর্মের ৫১টি শক্তিপীঠের অন্যতম। বিশ্বাস করা হয়, দেবী সতীর শরীরের ডান পায়ের আঙুল এই স্থানে পতিত হয়েছিল। সেই থেকেই এই স্থান দেবী কালীপূজার প্রধান কেন্দ্র হিসেবে প্রসিদ্ধি লাভ করে।
প্রাচীন কাহিনি অনুযায়ী, সতী স্বামীর অপমান সইতে না পেরে যজ্ঞকুণ্ডে আত্মাহুতি দেন। শিব তখন শোকে সতীর দেহ কাঁধে নিয়ে তাণ্ডব নৃত্য শুরু করেন। তখন বিষ্ণু দেব তাঁর চক্র দিয়ে সতীর দেহকে খণ্ডিত করেন, যাতে শিবের তাণ্ডব থামে। সেই খণ্ডিত অংশগুলো যেখানে পড়েছিল, সেখানেই বিভিন্ন শক্তিপীঠের সৃষ্টি হয়। কালীঘাট সেইসব তীর্থস্থানের মধ্যে অন্যতম।
ঐতিহাসিক সূত্রে জানা যায়, কালীঘাটের অস্তিত্ব অন্তত পনেরো শতক থেকে বিদ্যমান। ‘মনসা মঙ্গল’ ও ‘চণ্ডীমঙ্গল’-এর মতো মধ্যযুগীয় সাহিত্যে কালীঘাটের উল্লেখ পাওয়া যায়। বর্তমান মন্দিরের স্থাপত্য প্রায় দুই শতাব্দী পুরনো। ১৮০৯ খ্রিষ্টাব্দে সাবর্ণ রায়চৌধুরী পরিবারের পৃষ্ঠপোষকতায় বর্তমান মন্দির নির্মিত হয়। এর আগে এখানে ছিল মাটির ঘর ও কাঠের ছাউনিযুক্ত প্রাচীন মন্দির।
মন্দিরের দেবীমূর্তি অনন্য — কালো পাথরে গঠিত দেবীর চারটি হাত, তিনটি চোখ এবং লাল জিহ্বা প্রসারিত। দেবীর পায়ের নিচে শায়িত শিবের রূপও এখানে পূজিত হয়। মন্দির প্রাঙ্গণে রয়েছে ‘কুণ্ডুপুকুর’ নামে এক পবিত্র জলাধার, জনশ্রুতি এই জলে ই নিমজ্জিত আছে প্রস্তরীভূত ডান পায়ের আঙ্গুল , এর জল পবিত্র বলে ভক্তদের বিশ্বাস।
কালীঘাট শুধু পূজার কেন্দ্র নয়, এটি কলকাতার প্রাণের সঙ্গে যুক্ত। কালীপূজা, দুর্গাপূজা ও দীপাবলির সময় এখানে ভক্তদের উপচে পড়া ভিড় হয়। আশপাশের এলাকায় গড়ে উঠেছে নানা দোকান, ফুলবাজার ও প্রসাদ বিক্রির স্থান। ধর্মের পাশাপাশি এই অঞ্চল এখন এক জীবন্ত সংস্কৃতি কেন্দ্র।
বিশেষজ্ঞদের মতে, “কলিকাতা” বা “কলকাতা” নামটির উৎসও “কালিকা ঘাট” শব্দ থেকেই এসেছে। অর্থাৎ, এই মন্দিরই আজকের শহর কলকাতার নামের জননী।
আজও কালীঘাট সেই একই ভক্তি, শ্রদ্ধা ও ঐতিহ্যের আলোয় আলোকিত। এটি শুধু এক তীর্থ নয় — এটি বাংলার আত্মার প্রতীক, যেখানে ইতিহাস, ধর্ম ও মানুষের বিশ্বাস একাকার হয়ে যায়।
৩৫০ বছরের ঐতিহ্য নিয়ে দীপান্বিতা কালীপুজোর প্রস্তুতি জগৎনগরে
৫৫০ বছরের প্রাচীন ঐতিহ্যকে নিয়ে জাঁকজমক সহকারে পালিত হয় শান্তিপুরের মহিষখাগী কালীমায়ের পুজো
ইতিহাস বইয়ের পৃষ্ঠা থেকে বেরিয়ে এখানে দাঁড়িয়ে আছে চোখের সামনে
দীপাবলির আগে ধনতেরসেই ঘটতে চলেছে এক গুরুত্বপূর্ণ জ্যোতিষীয় পরিবর্তন
তাজপুরের আসল সৌন্দর্য তার নিঃস্তব্ধতায়
চারশো বছরের পুরোনো এক বৃদ্ধার ভক্তি, এক শ্যামাঙ্গী কন্যার অলৌকিক আবির্ভাব আর আকর গাছের নিচে প্রতিষ্ঠিত দেবী, আজও জীবন্ত সোনামুখীর ‘হট নগর কালীপুজো’র ঐতিহ্য ও বিশ্বাস।
মাদক পাচারকারী ডুবজাহাজে সফল হামলায় আনন্দে আত্মহারা ট্রাম্প
বিবৃতি জারি কাতারের বিদেশমন্ত্রকের
রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধ থামাতে মরিয়া ট্রাম্প
আগুন নেভাতে গিয়ে গুরুতর আহত ৩৫ জন
প্রতিবাদে সামিল আইনজীবী থেকে শিক্ষক