নিজস্ব প্রতিনিধি , বীরভূম - ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলা তার ধর্মীয় ঐতিহ্য , আধ্যাত্মিক সাধনা এবং তন্ত্রসাধনার জন্য সুপরিচিত। এই জেলাতেই অবস্থিত মা তারার পীঠস্থান তারাপীঠ। যেখানে সাধক বামাখ্যাপা মা তারার সাধনা করে সিদ্ধিলাভ করেছিলেন। তারাপীঠের মন্দির ও শ্মশানভূমি আজও সারা দেশজুড়ে ভক্তদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু। কিন্তু এই তারাপীঠের কাছেই লুকিয়ে রয়েছে আরেকটি রহস্যময় তীর্থস্থান — মৌলীক্ষা মায়ের মন্দির। যে মন্দিরে মৌলীক্ষা মা , মা তারার বড়ো দিদি হিসেবে পূজিত হন। তবে এই মন্দিরের কথা আজও বহু মানুষের অজানা।
মৌলীক্ষা মায়ের পরিচয়
কথিত আছে , মৌলীক্ষা মা হলেন মা তারার জ্যেষ্ঠা। তার মন্দিরটি পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলার সীমান্ত সংলগ্ন এলাকায় অবস্থিত হলেও প্রকৃতপক্ষে এটি ঝাড়খণ্ড রাজ্যের দুমকা জেলার মুলুটি গ্রামে অবস্থিত। তারাপীঠ থেকে এই মন্দিরের দূরত্ব প্রায় ৯ – ১০ কিলোমিটার। স্থানীয় বিশ্বাস অনুযায়ী , তারাপীঠে মা তারার দর্শনের পর মৌলীক্ষা মায়ের পুজো না করলে তীর্থযাত্রা সম্পূর্ণ হয় না।
ইতিহাস ও উৎপত্তি
মৌলীক্ষা মায়ের মন্দিরের ইতিহাস কয়েক শতাব্দী পুরোনো। ধারণা করা হয় , মল্ল রাজাদের আমলে এই মন্দিরের উৎপত্তি। সেই সময় এই অঞ্চলকে “মহুলটি” নামে ডাকা হতো , যা পরবর্তীতে “মুলুটি” নামে পরিচিতি লাভ করে। স্থানীয় লোককথা অনুযায়ী , রাজা রাখড়চন্দ্র এক তান্ত্রিক গুরু দণ্ডীস্বামী সর্বানন্দ তীর্থজীর পরামর্শে এখানে একটি রহস্যময় মস্তকমূর্তি আবিষ্কার করেন। এরপর তিনি সেই মূর্তিকেই মৌলীক্ষা দেবী হিসেবে পূজার ব্যবস্থা করেন।
সাধক বামাখ্যাপা ও মৌলীক্ষা মায়ের যোগসূত্র
তারাপীঠের বিখ্যাত তন্ত্রসাধক বামাখ্যাপার জীবনের সঙ্গেও এই মন্দিরের গভীর সম্পর্ক রয়েছে। কথিত আছে , বামাখ্যাপা প্রথমে মৌলীক্ষা মায়ের কাছে সাধনা শুরু করেছিলেন। পরবর্তীকালে তিনি মা তারার সাধনায় ব্রতী হন। তিনি নিজেই বলতেন — “মৌলীক্ষা মায়ের দর্শন না করে তারাপীঠে যাওয়ার অর্থ , সাধনার অর্ধেকটুকু ফেলে যাওয়া।”
মন্দিরের বিশেষত্ব
এই মন্দিরের গর্ভগৃহ অত্যন্ত ছোট , একসঙ্গে মাত্র একজন পুরোহিত ও এক - দুজন ভক্ত প্রবেশ করতে পারেন। সবচেয়ে রহস্যময় বিষয় হলো দেবীর মূর্তি। এখানে দেবীকে কোনো পূর্ণাঙ্গ মূর্তি রূপে নয় , বরং একটি দেহহীন মুখমণ্ডল রূপে প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছে। স্থানীয়দের বিশ্বাস , দেবীর এই মূর্তি নানা সময়ে নানা রূপে প্রকাশ পায় এবং ভক্তরা তার সেই রূপ অনুভব করেন।
বর্তমান গুরুত্ব ও উৎসব
মৌলীক্ষা মায়ের মন্দিরে সারা বছর পুজো হয়। তবে দুর্গাপুজো ও কালীপুজো উপলক্ষে এখানে বিশেষ ভক্তসমাগম হয়। পশ্চিমবঙ্গ ও ঝাড়খণ্ড দুই রাজ্য থেকেই হাজার হাজার ভক্ত এই সময়ে আসেন। তন্ত্রসাধনা ও আধ্যাত্মিক সাধনা করতে।
নেপালের প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর নিয়ে ধোঁয়াশা
জাতিবিদ্বেষী মন্তব্যের পর এবার ভারতকে ‘ভ্যাম্পায়ার’ বলে আক্রমণ পিটার নাভারোর&nb...
ট্রাম্পের ব্যাপরে আয়োজকদের তরফে আগে নির্দেশ দেওয়া হলেও তা অমান্য করে বোর্ড
তরুণ প্রজন্মের আগুনে নতজানু হয়েছে ওলি সরকার
হাড়হিম করা ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় মুহূর্তে ভাইরাল