নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা - দুর্গাপুজো শুধু উৎসব নয়, বাঙালির আবেগের আরাধনা। কিন্তু উৎসবের আনন্দে ভাসতে ভাসতেই কি আমরা কখনো গভীরভাবে লক্ষ করেছি মা দুর্গার মুখ? যদি খুঁটিয়ে দেখেন, কপালের নীচে, নাকের উপরের অংশে একটি বিশেষ চিহ্ন চোখে পড়বে। এই চিহ্নই আসলে উর্ণনাভ অর্থাৎ মাকড়সার প্রতীক। ডাকের সাজে প্রতিমার মুখে এই চিহ্ন সবচেয়ে স্পষ্টভাবে ধরা দেয়।
উর্ণনাভ - মহামায়ার প্রতীক
হিন্দু দর্শন অনুসারে, এই উর্ণনাভ কেবল এক অলঙ্কার নয়, বরং মহামায়ার প্রতীক। প্রাচীন বিশ্বাসে মাকড়সাকে দেবীরই রূপ হিসেবে ধরা হয়েছে। এমনকি আজও বহু পরিবারে দুর্গাপুজোর সময় বাড়িতে মাকড়সা দেখা গেলে তাকে তাড়াতে মানা করা হয়। মনে করা হয়, দেবী স্বয়ং মাকড়সার রূপে গৃহে আগমন করেছেন।
মাকড়সার প্রতীকী ব্যাখ্যা
মাকড়সা নিজে জাল বিস্তার করে, আবার সেই জালে নিজে বন্দি হয় না। এই ভাবনাটিই প্রতিফলিত হয়েছে মহামায়ার রূপে। মহামায়া সমগ্র জগৎকে মায়ার জালে আবদ্ধ করেছেন, কিন্তু তিনি নিজে সেই মায়ার ঊর্ধ্বে। তিনি স্রষ্টা, তিনি নিয়ন্ত্রক, অথচ কোনো বন্ধনে আবদ্ধ নন।
দার্শনিক তাৎপর্য
মহামায়া স্বয়ং ব্রহ্ম। তিনি মায়া সৃষ্টি করেছেন, সেই মায়ার মধ্যেই বিরাজ করছেন, কিন্তু কোনোভাবেই তার দ্বারা প্রভাবিত নন। প্রতিমার মুখে উর্ণনাভের উপস্থিতি সেই গভীর তত্ত্বকেই প্রকাশ করে,সৃষ্টির রহস্য, মায়ার জাল, এবং তার ঊর্ধ্বে মহামায়ার মহিমা।
অতএব, দুর্গাপুজোর মণ্ডপে প্রবেশ করলে শুধু প্রতিমার সৌন্দর্যেই নয়, মায়ের মুখের উর্ণনাভ চিহ্নেও দৃষ্টি দিন। মনে রাখুন, এটি কেবল সাজসজ্জা নয়, বরং মহামায়ার অসীম শক্তি ও সৃষ্টির দর্শনের প্রতীক। আর সেই চিহ্ন থেকেই আমরা উপলব্ধি করি,মা দুর্গা আমাদের আবদ্ধ করেছেন মায়ার বন্ধনে, অথচ তিনি নিজে চিরমুক্ত, চিরঊর্ধ্ব। তাই তাঁকেই প্রণাম জানিয়ে শুরু হোক পুজোর আনন্দযাত্রা।
ইজরায়েল-হামাস যুদ্ধে নয়া মোড়
ট্রাম্পের নোবেল হাতছাড়া হওয়ার ক্ষতে প্রলেপ
বিক্ষোভ রুখতে নির্মম দমননীতির পথ বেছে নিয়েছে শাহবাজ শরিফের প্রশাসন
স্বাভাবিক ছন্দে ফিরতে চলেছে গাজা
হতাহতের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ প্রশাসনের