নিজস্ব প্রতিনিধি , কলকাতা - ইন্টারনেটকে আমরা সাধারণত তিনটি স্তরে ভাগ করি—সারফেস ওয়েব , ডিপ ওয়েব এবং ডার্ক ওয়েব। সারফেস ওয়েব হলো সেই অংশ, যেটা আমরা প্রতিদিন গুগল, ইউটিউব, ফেসবুক বা সংবাদপত্রের ওয়েবসাইটে ব্যবহার করি। কিন্তু এই দৃশ্যমান অংশটি পুরো ইন্টারনেটের মাত্র ৪–৫ শতাংশ। এর নিচে রয়েছে এক বিশাল, অদৃশ্য জগৎ—ডিপ ওয়েব, যেখানে রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাটাবেস, ব্যাংকের রেকর্ড, সরকারি তথ্যভান্ডার ইত্যাদি। আর এই ডিপ ওয়েবের গভীর অন্ধকার স্তরেই বাস করে ডার্ক ওয়েব —ইন্টারনেটের সেই অংশ, যেটি রহস্য, অপরাধ আর ভয়ের প্রতীক হয়ে উঠেছে।
ডার্ক ওয়েবের ইতিহাস - ডার্ক ওয়েবের সূচনা আসলে অপরাধের জন্য নয়। ১৯৯০-এর দশকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনী ও গবেষকরা এমন এক প্রযুক্তি তৈরি করেন, যার মাধ্যমে গোপন যোগাযোগ রক্ষা করা সম্ভব হয়। এর নাম ছিল TOR (The Onion Router)—একটি বিশেষ ব্রাউজার যা ব্যবহারকারীর পরিচয় লুকিয়ে রাখে। পরে এটি সাধারণ মানুষের জন্য উন্মুক্ত করা হয়, যাতে সাংবাদিক, মানবাধিকারকর্মী কিংবা রাজনৈতিক শরণার্থীরা নিরাপদে তথ্য আদান–প্রদান করতে পারেন। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে এই প্রযুক্তির অপব্যবহার শুরু হয়, আর ডার্ক ওয়েব হয়ে ওঠে অপরাধের আস্তানা।
কীভাবে কাজ করে ডার্ক ওয়েব - ডার্ক ওয়েবে প্রবেশ করা যায় না গুগল বা সাধারণ ব্রাউজার দিয়ে। এর জন্য লাগে TOR ব্রাউজার, যা ব্যবহারকারীর IP ঠিকানা গোপন রাখে এবং এনক্রিপ্টেড সার্ভারের মাধ্যমে ডেটা আদান–প্রদান করে। এখানকার ওয়েবসাইটগুলোর ঠিকানা সাধারণত শেষ হয় ".onion” দিয়ে, যা সার্চ ইঞ্জিনে ইনডেক্স হয় না। ফলে এসব সাইট খুঁজে পাওয়া প্রায় অসম্ভব, যদি না কারও কাছে নির্দিষ্ট লিংক থাকে।
রহস্য ও অন্ধকার দিক - ডার্ক ওয়েবের রহস্যময়তা এর গোপনীয়তায়। এখানে মানুষ সম্পূর্ণ অজ্ঞাত পরিচয় হয়ে থাকতে পারে। কিন্তু এই সুবিধাই অপরাধীদের স্বর্গরাজ্য তৈরি করেছে।
ডার্ক ওয়েবে পাওয়া যায়—
* মাদক, অস্ত্র, নকল পাসপোর্ট ও ক্রেডিট কার্ড বিক্রির বাজার
* হ্যাকিং সার্ভিস ও ডেটা চুরি করা অ্যাকাউন্ট
* অবৈধ পর্নোগ্রাফি ও মানব পাচারের নেটওয়ার্ক
* সাইবার অপরাধ ও গুপ্তচরবৃত্তির ঘাঁটি
তবে সব কিছুই খারাপ নয়। কিছু জায়গায় ডার্ক ওয়েবকে ব্যবহার করা হয় গোপন সাংবাদিকতা , সরকারি সেন্সরশিপ এড়ানো, কিংবা সংবেদনশীল তথ্য ফাঁসেরজন্য।
কেন এটি ভয়ংকর - ডার্ক ওয়েব ভয়ংকর কারণ এটি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজর এড়িয়ে চলে। এখানকার লেনদেন হয় বিটকয়েন বা অন্যান্য ক্রিপ্টোকারেন্সির মাধ্যমে, যা ট্র্যাক করা কঠিন। অনেক সময় দেখা যায়, একটি সাইট বা গ্রুপ এক রাতের মধ্যে মিলিয়ে যায়, আবার অন্য নামে ফিরে আসে। ফলে অপরাধীদের ধরার কাজ প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে।
ডার্ক ওয়েব হলো ইন্টারনেটের এক অন্ধকার আয়না—যেখানে প্রযুক্তির মুক্তির পাশাপাশি লুকিয়ে আছে মানবিক অমানবিকতা। এর অস্তিত্ব আমাদের মনে করিয়ে দেয়, প্রযুক্তি কখনো নিজে ভালো বা খারাপ নয়; এর ব্যবহারই নির্ধারণ করে তার রূপ। তাই ডার্ক ওয়েবের ভয়ঙ্কর দিক বুঝে আমাদের সতর্ক থাকা জরুরি—কারণ এই অন্ধকার জগতের এক ভুল পদক্ষেপই হতে পারে বিপদের শুরু।
মধ্যপ্রাচ্যে রমজান মাসে খেজুরের পাশাপাশি জালাবিয়া এখনও ইফতারের অন্যতম অঙ্গ
চলুন সংক্ষেপে বিষয়টি জেনে নেওয়া যাক
অকাল বৃষ্টিতে ভাসবে রাজ্য
দুই দিনের ছুটি নিয়ে ঘুরে আসা যায় বড়ন্তি থেকে
হামলার কথা স্বীকার ইজরায়েলের
সতর্কতামূলক পদক্ষেপ এয়ারবাসের
সোশ্যাল মিডিয়ায় মুহূর্তের মধ্যে ভাইরাল ভিডিও
বিবৃতি জারি ট্রাম্প প্রশাসনের
আপাত বন্ধ স্কুল-অফিস