নিজস্ব প্রতিনিধি , কলকাতা - আজ, ৭ই সেপ্টেম্বর ২০২৫, রবিবারের রাত। আকাশে পূর্ণিমার উজ্জ্বল চাঁদ হঠাৎই কালো ছায়ায় ঢেকে গিয়ে রক্তিম হয়ে উঠবে। নাম তার - ব্লাড মুন। বিরল এই চন্দ্রগ্রহণ স্থায়ী হবে টানা ৮২ মিনিট। জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের চোখে এটি এক মনোমুগ্ধকর মহাজাগতিক দৃশ্য হলেও, প্রাচীন পুরাণে এটিই ধরা হয় দেব-অসুরের চিরন্তন যুদ্ধের রক্তাক্ত স্মৃতি হিসেবে।
সময়সূচি
সুতক কাল শুরু: দুপুর ১২টা ৫৭ মিনিটে
গ্রহণ শুরু: রাত ৮টা ৫৮ মিনিটে
আংশিক গ্রহণ: রাত ৯টা ৫৭ মিনিটে
সর্বোচ্চ গ্রাস: রাত ১১টা ৪২ মিনিটে
শেষ: রাত ১টা ২৬ মিনিটে (৮ সেপ্টেম্বর)
দৃষ্টিযোগ্য অঞ্চল
ভারত, এশিয়া, ইউরোপ, আফ্রিকা ও অস্ট্রেলিয়ায় স্পষ্ট দেখা যাবে।
পুরাণের কাহিনি – রাহুর অভিশাপ
হিন্দু পুরাণ বলে - সমুদ্র মন্থনে অমৃত উঠলে দেবতা ও অসুর মিলে তা ভাগাভাগি করতে বসে। কিন্তু অসুর ‘স্বর্ভানু’ ছদ্মবেশে দেবতার সারিতে ঢুকে অমৃত পান করে ফেলে। বিষ্ণু তা টের পেয়ে Sudarshan Chakra দিয়ে তার মস্তক ছিন্ন করেন। শরীরটি কেতু, মাথাটি রাহু হয়ে আকাশে ভাসতে থাকে। সেই থেকেই প্রতিশোধের আগুনে রাহু সূর্য-চন্দ্রকে গ্রাস করে।
চন্দ্রগ্রহণ তাই মনে করা হয় রাহুর অশুভ ছায়া। চাঁদ তখন রক্তিম,যেনো দেব-অসুর সংঘর্ষের রক্তমাখা সাক্ষী।
ভয় ও কুসংস্কার
চিরকালই চন্দ্রগ্রহণকে কেন্দ্র করে নানা আতঙ্ক ও লোকবিশ্বাস প্রচলিত।
বিশ্বাস করা হয়, গ্রহণের আলো গর্ভস্থ শিশুর ক্ষতি করতে পারে।
গর্ভবতী মহিলাদের বাইরে না যাওয়া, সেলাই-কাটা, রান্না বা ছুরি-চাকু ব্যবহার নিষিদ্ধ।
গ্রহণ চলাকালে খাবার না খাওয়ার রীতি রয়েছে।
গ্রহণ শেষে স্নান, গঙ্গাজল ছিটানো ও দানপুণ্য অপরিহার্য বলে মনে করা হয়।
বিজ্ঞানের চোখে
কিন্তু জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা বলছেন - চন্দ্রগ্রহণ নিছক প্রাকৃতিক খেলা। পৃথিবী সূর্য ও চাঁদের মাঝখানে এলে, পৃথিবীর ছায়া চাঁদে পড়ে। সূর্যের আলো পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল পেরিয়ে এসে চাঁদকে লালচে রঙে রাঙিয়ে তোলে।
কোনও অশুভ প্রভাব নেই। খালি চোখেই নিরাপদে দেখা যায় এই মহাজাগতিক দৃশ্য।
গর্ভবতী মহিলাদের জন্য
লোকবিশ্বাস অনুযায়ী নানা নিষেধাজ্ঞা থাকলেও, চিকিৎসাবিজ্ঞানের মতে,গ্রহণের আলো গর্ভস্থ শিশুর ক্ষতি করে না। ভয় বা চাপ সৃষ্টি না করে বিশ্রাম নেওয়া উত্তম।
৭ই সেপ্টেম্বরের এই রক্তিম চন্দ্রগ্রহণকে অনেকে দেখছেন রাহুর প্রতিশোধের অভিশাপ হিসেবে, কেউ বা ঈশ্বরের সতর্কবার্তা। কিন্তু বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে এটি কেবল এক অসাধারণ মহাজাগতিক আয়োজন,যেখানে পৃথিবী, চাঁদ আর সূর্য এক সরলরেখায় দাঁড়িয়ে তৈরি করছে এক রহস্যময় দৃশ্য।
আজকের রাত তাই ভয়ের নয়, বরং বিস্ময়ের,রক্তিম চাঁদের তলায় ইতিহাস, পুরাণ আর বিজ্ঞান মিলে যাচ্ছে এক অদ্ভুত উৎসবে।
ইজরায়েল-হামাস যুদ্ধে নয়া মোড়
ট্রাম্পের নোবেল হাতছাড়া হওয়ার ক্ষতে প্রলেপ
বিক্ষোভ রুখতে নির্মম দমননীতির পথ বেছে নিয়েছে শাহবাজ শরিফের প্রশাসন
স্বাভাবিক ছন্দে ফিরতে চলেছে গাজা
হতাহতের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ প্রশাসনের