68a18f7b5954d_IMG-20250817-WA0146
আগস্ট ১৭, ২০২৫ দুপুর ০১:৪৫ IST

অষ্টনাগের অভিশাপ মনসা পুজোর রহস্য ও সাপের আতঙ্কে বাংলার আদি আচার

নিজস্ব প্রতিনিধি,কলকাতা - বাংলার গ্রামীণ আকাশে আজ সন্ধ্যা নামতেই শুরু হয়েছে এক ভয় আর ভক্তির মিশেল। শ্রাবণ মাসের শেষদিনে, সাংকান্তি ক্ষণে অনুষ্ঠিত হচ্ছে মনসা পূজা। ঘরের উঠোনে সাজানো কলাপাতা, দুধ, ফুল, ধূপকাঠি আর সিঁদুরে ভরে উঠেছে বাতাস। ভক্তদের বিশ্বাস,আজকের পূজা তাঁদের ঘরকে সাপের ভয় থেকে রক্ষা করবে, আর অগ্রাহ্য করলে নেমে আসতে পারে নাগদেবীর অভিশাপ।

জন্ম ও পরিচয় :

পুরাণ মতে, দেবী মনসা হলেন শিবের কন্যা ও সাপরাজ বাসুকির বোন। আবার অন্য কাহিনিতে বলা হয়, তিনি ঋষি কশ্যপ ও কাদ্রুর সন্তান। জন্ম থেকেই সর্পলোকে তাঁর আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত।

চন্দ সাদাগরের কাহিনি :

মঙ্গলকাব্যে উল্লেখ আছে,ধনী বণিক চন্দ সাদাগর শিবভক্ত ছিলেন। তিনি মনসাকে পূজা মানতে অস্বীকার করেন। এতে ক্রোধান্বিত হয়ে দেবী তাঁর জাহাজ ডুবিয়ে দেন, সম্পদ ধ্বংস করেন, সন্তানদের সাপ দংশনে প্রাণ কেড়ে নেন।

লখিন্দর ও বেহুলার আখ্যান :

সবচেয়ে মর্মস্পর্শী কাহিনি হলো লখিন্দর বেহুলার। লখিন্দরের বিয়ের রাতে মানসার প্রেরিত সাপ দংশন করে তাকে হত্যা করে। তার স্ত্রী বেহুলা মৃত স্বামীকে নিয়ে নদীপথে ভেসে পড়েন। দুঃসহ কষ্ট সহ্য করে তিনি দেবীর কাছে প্রার্থনা করেন। অবশেষে তাঁর ভক্তি ও সহনশীলতায় দেবী সন্তুষ্ট হন,লখিন্দর ফিরে আসে জীবনে। এই কাহিনি নারীর অদম্য সাহস ও ভক্তির প্রতীক হিসেবে আজও বাংলার লোকসংস্কৃতিতে অমর।

পূজার প্রবর্তন :

চূড়ান্তভাবে মনসা দেবী চন্দকে পূজা করতে বাধ্য করেন। সেই থেকে গ্রামীণ বাংলায় মনসা পূজা প্রতিষ্ঠিত হয়। বিশ্বাস আছে, পূজা করলে শান্তি, না করলে অভিশাপ।

অষ্টনাগ ও লোকবিশ্বাস :

মনসার সঙ্গে পূজিত হন অষ্টনাগ বাসুকি, পদ্ম, কুলিক, করকট, শঙ্খ, মহাপদ্ম,ধৃতরাষ্ট্র ও তক্ষক। কলসিতে তাঁদের আহ্বান করা হয়। গ্রামে আজও বলা হয়, পূজা না করলে সাপ ঘরে ঢোকে,আর পূজা করলে পরিবারের সুরক্ষা নিশ্চিত হয়।

আজকের তিথি ও আচার :

আজ ১৭ই অগস্ট ২০২৫, শ্রাবণ মাসের শেষ দিন,শুক্লপক্ষ সাংকান্তি। জ্যোতিষ মতে, আজ দেবী মনসার পূজা করলে অশুভ শক্তি দূর হয়। দক্ষিণবঙ্গের বহু গ্রামে আজও বসে মনসা মেলা, গাওয়া হয় মানসামঙ্গল গীতি। বিশেষ প্রথা হলো,সিয় গাছের ডাল ঘরে আনা, যাতে অমঙ্গল দূর হয়।

“মনসা মায়ের ভয়ে গ্রামে পূজা বাদ যায় না। আজও বিশ্বাস করি,অবহেলা করলে সাপের ভয় এড়ানো যায় না।”
- এক প্রবীণ ভক্ত, নদিয়া

শ্রাবণের শেষ দিন: ১৭ অগস্ট ২০২৫
পূজার সময়: সায়ংকাল, সাংকান্তি ক্ষণ।
বিশ্বাস: পূজা না করলে নাগদেবীর অভিশাপ, করলে শান্তি।
আচার: কলাপাতা, দুধ, সাপের প্রতীক, সিয়গাছের ডাল।
চন্দ-মনসা-বেহুলা,ভয়, ভক্তি ও সাহসের চিরন্তন আখ্যান :

মনসা পূজা শুধু সাপভীতি থেকে মুক্তির জন্য নয়; এটি বাঙালি সংস্কৃতির এক অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। এখানে আছে ভয়, অভিশাপ, প্রেম, ভক্তি ও মুক্তির সমন্বয়। শ্রাবণের শেষ দিনের এই পূজা যেন মনে করিয়ে দেয়,মনসা দেবীর ভয় এড়াতে হলে তাঁর ভক্তিই একমাত্র পথ।

TV 19 Network NEWS FEED

‘সান্ত্বনা’ পুরস্কার! ইজরায়েলের সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মানে সম্মানিত ট্রাম্প

‘সান্ত্বনা’ পুরস্কার! ইজরায়েলের সর্বোচ্চ অসামরিক স...

ট্রাম্পের নোবেল হাতছাড়া হওয়ার ক্ষতে প্রলেপ

গৃহযুদ্ধে জ্বলছে পাকিস্তান! সরকারবিরোধী বিক্ষোভ, ‘নিষ্ঠুর’ পুলিশের গুলিতে মৃত ১৩

গৃহযুদ্ধে জ্বলছে পাকিস্তান! সরকারবিরোধী বিক্ষোভ, ‘...

বিক্ষোভ রুখতে নির্মম দমননীতির পথ বেছে নিয়েছে শাহবাজ শরিফের প্রশাসন

মর্মান্তিক দুর্ঘটনা দক্ষিণ আফ্রিকায়, নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ল বাস, মৃত ৪২

মর্মান্তিক দুর্ঘটনা দক্ষিণ আফ্রিকায়, নিয়ন্ত্রণ হার...

হতাহতের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ প্রশাসনের