নিজস্ব প্রতিনিধি , কলকাতা - অল্প পুঁজিতে মোমবাতি তৈরির ব্যবসা শুরু করা একটি লাভজনক ও সহজ উদ্যোগ। বর্তমানে মোমবাতি শুধু বিদ্যুতের বিকল্প নয়, বরং ঘর সাজানোর, উপহার দেওয়ার, স্পা ও রেস্টুরেন্টের সৌন্দর্য বৃদ্ধির অন্যতম উপকরণ। তাই সারাবছরই এর চাহিদা থাকে। ঘরে বসেই সামান্য পুঁজিতে এই ব্যবসা শুরু করা যায় এবং ধীরে ধীরে বড় পরিসরে নেওয়া সম্ভব।

প্রাথমিকভাবে ৫,০০০ থেকে ১৫,০০০ টাকার মধ্যে এই ব্যবসা শুরু করা যায়। খরচের মধ্যে প্রধানত লাগে— প্যারাফিন বা সয় ওয়াক্স, ছাঁচ (mould), সুতলি (wick), রঙ, সুগন্ধি, গলানোর পাত্র, গ্যাস স্টোভ এবং প্যাকেজিং উপকরণ। এসব জিনিস স্থানীয় বাজার বা অনলাইন প্ল্যাটফর্ম থেকে সহজেই পাওয়া যায়।

মোমবাতি তৈরির প্রক্রিয়াটি খুবই সহজ। প্রথমে ওয়াক্স ছোট টুকরো করে গরম পানিতে রাখা পাত্রে গলাতে হয় (ডাবল বয়লার পদ্ধতিতে)। মোম সম্পূর্ণ গলে গেলে তাতে পছন্দমতো রঙ ও সুগন্ধি মেশাতে হয়। তারপর ছাঁচের মাঝখানে সুতলি বসিয়ে তরল মোম ঢেলে দিতে হয়। কিছুক্ষণ ঠান্ডা হলে মোম শক্ত হয়ে যায়, তখন ছাঁচ থেকে মোমবাতি বের করে প্যাকেট করা যায়। সুন্দর ও আকর্ষণীয় প্যাকেজিং ক্রেতার মনোযোগ আকর্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

বাজারজাত করার জন্য অনলাইন ও অফলাইন দুই উপায়ই ব্যবহার করা যায়। ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, দারাজ, ইটসি ইত্যাদি অনলাইন মার্কেটপ্লেসে পেজ খুলে বিক্রি করা যায়। পাশাপাশি গিফট শপ, বুটিক হাউস, সাজসজ্জার দোকান ও স্পা সেন্টারে সরবরাহ করা সম্ভব। চাইলে স্থানীয়ভাবে হোম ডেলিভারি সার্ভিসের মাধ্যমেও বিক্রি বাড়ানো যায়।

লাভের দিক থেকে এই ব্যবসা বেশ আকর্ষণীয়। ধরো, ৫০০ টাকায় কাঁচামাল কিনে ২০টি ছোট মোমবাতি তৈরি করলে প্রতিটি ৫০ টাকা দরে বিক্রি করে ১,০০০ টাকা আয় করা যায়। তাতে ৫০০ টাকা নিট লাভ থাকে। উৎপাদন বাড়লে ইউনিট খরচ কমে যায়, ফলে লাভের হারও বৃদ্ধি পায়।

এই ব্যবসাকে বড় করতে পারো নতুন ডিজাইন ও সুগন্ধি যুক্ত করে— যেমন কফি, ল্যাভেন্ডার, ভ্যানিলা বা ফুলের ঘ্রাণযুক্ত মোমবাতি। নিজস্ব ব্র্যান্ড নাম তৈরি করে আকর্ষণীয় লেবেল দাও। উৎসব বা বিশেষ দিবসে উপহার প্যাকেজ তৈরি করো, এতে বিক্রি আরও বাড়বে।

সব মিলিয়ে বলা যায়, মোমবাতি তৈরি একটি সৃজনশীল ও লাভজনক ক্ষুদ্র ব্যবসা। অল্প পুঁজি, সামান্য সময় ও একটু সৃজনশীলতা থাকলেই ঘরে বসে এই উদ্যোগ থেকে নিয়মিত আয় করা সম্ভব।