৩৭ পেরিয়ে ৩৮-এ পা, শুভ জন্মদিন ফিফা পুত্র

নিজস্ব প্রতিনিধি, রোজারিও - ১৩ বছর বয়সে ন্যাপকিনে সই করার পরেই যেন প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়েছিলেন বিশ্বসেরা হওয়ার। ১৯৮৭ সালের 24শে জুন আর্জেন্টিনার রোজারিও শহরে জন্ম নিয়েছিলেন ফুটবল যাদুকর। 2000 সালে স্পেনের ক্লাব বার্সেলোনার অ্যাকাডেমিতে যোগ দেওয়ার পরেই নিজের ভাগ্য লিখতে শুরু করেন। আজ সে বিশ্বসেরা। নিজের দেশ আর্জেন্টিনার হয়ে বিশ্বকাপ রয়েছে তার ঝুলিতে। একাধিক সাফল্যে মোড়া তার জীবন। ৩৭ পেরিয়ে আজ ৩৮-এ পদার্পণ করলেন তিনি। যিনি আর অন্য কেউ নন সকলের প্রিয় আর্জেন্টাইন তারকা ফুটবলার লিওনেল মেসি। 

     ফুটবলের সামনে কোনো বাধাকেই বড় করে দেখেননি লিওনেল আন্দ্রেস মেসি কুচেত্তিনি। ১০ বছর বয়সে হরমোনজনিত সমস্যার সম্মুখীন হওয়ায় বাকি ফুটবলারের থেকে উচ্চতায় কিছুটা হলেও পিছিয়ে পড়েন। তবে আজ বাকি তারকাদের থেকে অনেক শিখরে এই আর্জেন্টাইন ফুটবলার। বিশ্বকাপ থেকে শুরু করে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, কোপা আমেরিকা, লা-লিগা, কোপা ডেল রে-এর মত বড় বড় খেতাবের মালিক লিও। 

      ২০০৬ সালে প্রথমবার দেশের জার্সিতে অভিষেক হয় লিওনেল মেসির। ১৩ বছর বয়সে বার্সেলোনার হয়ে একটি ন্যাপকিনে চুক্তিবদ্ধ হয়েছিলেন তিনি। প্রথমদিকে অ্যাকাডেমিতেই চলে তার যাদুকর হওয়ার প্রস্তুতি। ১৭ বছর বয়সে বার্সেলোনার সিনিয়র দলে অভিষেক হওয়ার পরেই রূপকথা লিখতে শুরু করেন আর্জেন্টাইন তারকা। বার্সেলোনার হয়ে জিতেছেন ৪টি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ-এর খেতাব। এছাড়াও রয়েছে ১০টি লা-লিগা, ৭টি কোপা ডেল রে, ৪টি ক্লাব বিশ্বকাপ, ৮টি সুপার কোপা দে এস্পানা ও ৩টি উয়েফা সুপার কাপ। এছাড়াও ফুটবল বিশ্বে এক বিরল নজির রয়েছে তার। ৮টি ব্যালন ডিঅর এর মালিক 'লা পুলগা'। 
       
    বার্সেলোনার হয়ে শেষ চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতেছিলেন ২০১৪-১৫ সালে। এরপর প্রায় ৬ বছর আসেনি এই খেতাব। অন্যান্য ট্রফি নিজের ঝুলিতে ভরলেও দুধের স্বাদ ঘোলে মেটাতে নারাজ ছিল মেসি সমর্থকেরা। ২০২১ সালে বার্সেলোনা ছেড়ে অবশেষে  ফরাসি ক্লাব প্যারিস সেন্ট জার্মেই-তে যোগ দেন মেসি। তবে মেসির ওপর থেকে আস্থা হারাননি ফুটবলপ্রেমীরা। ইউসিএল-এর থেকেও মেসি এবং তার সমর্থকদের পাখির চোখ ছিল বিশ্বকাপে। তাদের শেষ ইচ্ছে ছিল দেশের হয়ে মেসিকে বিশ্বকাপ হাতে দেখার। ২০২২ সালে আর্জেন্টিনার হয়ে বিশ্বকাপ হাতে তুলে বহু প্রতীক্ষার অবসান ঘটান লিওনেল মেসি। এরপর থেকেই কার্যত "ফিফা পুত্র"- এর আখ্যা পান তিনি। 

      ২০২২ এবং 2023 সালে ফরাসি ক্লাবের হয়ে লিগ ওয়ানের খেতাবও জিতেছেন বিশ্বতারকা। এরপর বর্তমান ক্লাব ইন্টার মায়ামির সঙ্গে জিতেছেন লিগস কাপ। এমএলএস সাপোর্টার্স শিল্ড জিতেছেন ঠিক তার পরের বছরই 2024 সালে। ৪৫ টি কালেকটিভ ট্রফির মালিক এই আর্জেন্টাইন তারকা ফুটবলার। একাধিক ব্যক্তিগত সাফল্য অর্জন করেছেন তিনি। ইউরোপিয়ান গোল্ডেন বুট জিতেছেন ৬ বার। 
        
        ফুটবল বিশ্বে পদার্পণ করার পর থেকেই একাধিক ফুটবলার ও সমর্থকদের মন কেড়েছেন লিও মেসি। তার পায়ের জাদুতে পরাস্ত হয়েছেন বহু তারকা ফুটবলার। তার অন্যতম বিশেষত্ব ফাইভ স্টার দলের বিরুদ্ধে নিজেকে তুলে ধরা। প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডারদের ত্রাস লিও। শুধু বক্সের ভেতরে নয় বাইরে থেকেও প্রতিপক্ষের জালে বল জড়িয়ে দেওয়া তার কাছে যেন ''কাপ অফ টি"। বয়স প্রায় ৪০ ছুঁই ছুঁই। তবে এখনও মাঠে নামলেই তার পায়ের ভেল্কিতে মুগ্ধ গোটা ফুটবলবিশ্ব। বয়স যেন তার কাছে নিতান্তই সংখ্যা মাত্র।