ওড়িশা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীকে যৌন হেনস্থা, রাষ্ট্রপতি যাওয়ার পর ঘুম ভাঙল মুখ্যমন্ত্রী মাঝির
নিজস্ব প্রতিনিধি , ওড়িশা - ফকির মহান বিশ্ববদ্যালয়ে যৌন হেনস্থার শিকার হয়ে আগুনে আত্মহুতি এক ছাত্রীর। এই ঘটনাটি সামনে আসতেই সমগ্র রাজ্য জুড়ে তীব্র নিন্দার ঝড় উঠেছে। আর এই ঘটনাটি আবারও একবার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নারীদের সুরক্ষার বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তুলছে।
সূত্রের খবর , মৃতা ছিলেন ফকির মোহন অটোনোমাস কলেজের বি.এডের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। কলেজের বিভাগীয় প্রধান সমীর কুমার সাহুর বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ। তার অভিযোগ , সমীর কুমার সাহু তার কাছ থেকে যৌন সুবিধা চেয়েছিলেন। কিন্তু সে তাতে মানা করায় তাকে পরীক্ষায় ফেল করার হুমকি দেন। এই বিষয়ে কলেজের কতৃপক্ষকে জানানো হলে তারা বিষয়টি সাহুকে "ক্লিন চিট" দেওয়া হয়। এরপরেই হতাশা থেকে ওই ছাত্রী চরম সিদ্ধান্তে পৌঁছান। গত ১২ জুলাই কলেজের অধ্যক্ষের চেম্বারের বাইরে কেরোসিন ঢেলে নিজেকে আগুন ধরিয়ে দেন তিনি। তাৎক্ষণিকভাবে তাঁকে গুরুতর অবস্থায় ভুবনেশ্বরের এইমস হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
কিন্তু হাসপাতাল কতৃপক্ষের তরফে জানানো হয় , পর্যাপ্ত চিকিৎসা সত্ত্বেও তাঁকে বাঁচানো যায়নি। রেনাল রিপ্লেসমেন্ট থেরাপি এবং বার্নস আইসিইউতে চিকিৎসার পরেও ১৪ জুলাই রাত ১১টা ৪৬ মিনিটে তাঁকে মৃত ঘোষণা করা হয়। রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু তাকে হাসপাতালে দেখতে যাওয়ার একদিন পরেই সে মারা যায়। জানা যায় , ছাত্রীটি আরএসএস-ঘনিষ্ঠ ছাত্র সংগঠন অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের সক্রিয় সদস্য ছিলেন। মৃত্যুর আগে মেয়েটি এই ঘটনার কথা মৃত্যুর আগে মুখ্যমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী, জাতীয় মহিলা কমিশন, এমনকি জেলা পুলিশ প্রশাসনের কাছেও তিনি অভিযোগ জানান। কিন্তু কোথাও কোনও প্রতিকার পাননি।
ঘটনাটিতে ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী মোহন চরণ মাঝি সমাজমাধ্যমে শোকপ্রকাশ করে বলেন , " কলেজের ছাত্রীর মৃত্যুর খবর শুনে আমি গভীরভাবে শোকাহত। হাসপাতাল ও অভিজ্ঞ চিকিৎসকের চেষ্টার পরেও তাকে বাঁচানো সম্ভব হলো না। " ইতিমধ্যেই ঘটনায় অভিযুক্ত সমীর কুমার সাহুকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। জাতীয় মহিলা কমিশন স্বতঃপ্রণোদিতভাবে ঘটনার তদন্ত শুরু করার নির্দেশ দিয়েছে। এছাড়াও , ওড়িশা সরকারের পক্ষ থেকে আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে সমস্ত কলেজ ও বিশ্ববদ্যালয় গুলিকে মহিলাদের যৌন হয়রানির আইন ২০১৩ এর অধীনে অভ্যন্তরীন কমিটি গঠন করার নির্দেশ দিয়েছে।