ক্রীড়াবিশ্বে শোকের ছায়া, ১১৪ বছর বয়সে প্রয়াত প্রবীণ ম্যারাথনবিদ

নিজস্ব প্রতিনিধি, লন্ডন -  ২০১১ সালে টরেন্টোতে ১০০ বছর বয়সে ম্যারাথনে অংশগ্রহণ করেন ফৌজা সিং। জন্ম শংসাপত্র না থাকায় গিনিস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডের থেকে পান নি স্বীকৃতি। তবে গোটা বিশ্বের মন জয় করেছেন ব্রিটিশ ক্রীড়াবিদ। সোমবার একটি গাড়ির ধাক্কায় প্রাণ হারিয়েছেন প্রবীণ ম্যারাথনবিদ। তাঁর মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে ক্রীড়া জগতে। 

সূত্রের খবর, সোমবার পাঞ্জাবের জলন্ধরের কাছে নিজের গ্রামেই শেষ নিঃস্বাস ত্যাগ করেন ফৌজা সিং। রাস্তা পার হওয়ার সময় একটি গাড়ি তাঁকে ধাক্কা মারেন। মাথায় গুরুতর আঘাত পান তিনি। লন্ডনের একটি দৌড় ক্লাব ও দাতব্য সংস্থা তাঁর মৃত্যুর ব্যাপারটি নিশ্চিত করেছে। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স ছিল ১১৪ বছর। 

১৯৯৪ সালে ছেলের ভয়াবহ মৃত্যু তাঁর জীবন বদলে দেয়। গ্রামে ক্ষেত পরীক্ষার সময় বাতাসে উড়ে আসা একটি ধাতুর টুকরো ছেলের মাথা কেটে নিয়ে চলে যায়। চোখের সামনে ছেলের এই মর্মান্তিক মৃত্যু তাঁর জীবনে কঠিন প্রভাব ফেলে। মৃত্যুশোক কাটিয়ে উঠতে লন্ডনে ছোট ছেলের সঙ্গে থাকতে যান প্রবীণ ক্রীড়াবিদ। সেখানেই শিখ সম্প্রদায়ের দ্বারা আয়োজিত দৌড় প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতেন। 

 শিখ সম্প্রদায়ের কিছু ক্রীড়াবিদ তাঁকে দীর্ঘ দূরত্বের দৌড়ে অংশ নেওয়ার জন্য উৎসাহ দেন। এরপর একদিন টেলিভিশনে ম্যারাথন দৌড় দেখেই সেখানে অংশগ্রহণ করার জন্য মরিয়া হয়ে ওঠেন। ২০০৯ সালে ৮৯ বছর বয়সে প্রথমবার লন্ডন অলিম্পিক্সে অংশ নেন। এরপর আরও আটটি প্রতিযোগিতায় ভাগ নেন। ২০০৩ সালে টরেন্টো ম্যারাথনে তাঁর সেরা সময় ছিল ৫ ঘন্টা ৪০ মিনিট। দৌড় থেকে অবসর নেওয়ার পরেও ক্রীড়াপ্রেমী মানুষদের কাছে আবেদন জানিয়েছিলেন সিং আবেদন জানান তাঁকে মনে রাখতে। শুধু তাই নয় ইভেন্টগুলিতে তাঁকে আমন্ত্রণ জানানোর আর্জিও জানান। 

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ফৌজা সিংয়ের মৃত্যুতে গভীরভাবে শোক প্রকাশ করেছেন। তাঁকে শ্রদ্ধা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, "তিনি অসাধারণ ও ব্যতিক্রমী ক্রীড়াবিদ যার অবিশ্বাস্য ও দৃঢ় সংকল্প ছিল। তিনি তার ফিটনেসের মাঝে ভারতের তরুণ প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করেছেন।"